বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৩:৩৮ অপরাহ্ন

ভারতের মণিপুরে ব্যাপক সহিংসতা : যা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী

ভারতের মণিপুরে ব্যাপক সহিংসতা : যা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী

স্বদেশ ডেস্ক:

ভারতের মণিপুরের শুরু হওয়া ব্যাপক সহিংসতার বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাথে ফোনে কথা বলেছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। পাশাপাশি টুইটারে চার মিনিটের একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন তিনি। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, ‘সমাজের দুই অংশের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণেই এই সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।’ তিনি সবার কাছে শান্তি ফেরানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে, আদিবাসীদের বিক্ষোভ সহিংস আকার ধারণ করায় মণিপুরে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী এবং আসাম রাইফেলস। সংঘাতপূর্ণ অঞ্চল থেকে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানোর কাজ করছেন সামরিক কর্মকর্তারা ও জওয়ানরা। শান্তি বজায় রাখতে ফ্ল্যাগ মার্চ করছে সেনাবাহিনী।

বীরেন সিং বৃহস্পতিবার (৪ মে) ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘গত প্রায় ২৪ ঘণ্টায় ইম্ফল, চুরাচাঁদপুর, বিষ্ণুপুর, কাংপোকপি এবং মোরেহতে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের কিছু ঘটনা ঘটেছে। অনেক সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমাদের সমাজের দুটি অংশের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির ফলে এই ঘটনাগুলো ঘটেছে। আমরা আমাদের রাজ্যের বাসিন্দাদের জানমাল রক্ষায় অঙ্গীকারাবদ্ধ।’

তিনি বলেন, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের দীর্ঘমেয়াদী অভিযোগগুলোকে যথাযথভাবে সমাধান করা হবে। আমি আপনাদের নিজ নিজ এলাকায় শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। গুজবে কান দেবেন না। শান্তি বজায় রাখার জন্য আপনাদের সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা রাজ্য পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেছি। তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সহিংসতার সাথে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। মণিপুরকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্বাভাবিক করে তুলতে হবে। এর জন্য আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।’

উল্লেখ্য, ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলো মৈতেই জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছে যে তাদের তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধ জানিয়েছে স্থানীয় আদিবাসীরা। এই প্রেক্ষাপটে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল বুধবার। সেই মিছিল ঘিরেই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে চুরাচাঁদপুর জেলায়। এর আগে এই জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা।

এদিকে, এই জেলা থেকে আদিবাসী বনাম মৈতেইদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়েছে অন্য জেলাতেও। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের আট জেলায় জারি করা হয়েছে কারফিউ। বন্ধ হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা।

বুধবার (৩ মে) চুরাচাঁদপুর জেলাতেই সহিংসতার আগুন জ্বলতে শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়তে বাধ্য হয়েছিল। এ ঘটনার পর ইম্ফল পশ্চিম জেলার কাঞ্চিপুর ও ইম্ফল পূর্বে সোইবাম লেইকাইতে মৈতেই জনজাতির মানুষজন আদিবাসীদের ওপর হামলা করার জন্য পথে নামে। তবে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আদিবাসীদের সেই এলাকা থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সেনাবাহিনীর সহায়তায়। যাতে নতুন করে অঞ্চলে সহিংসতা না ছড়ায় এর জন্য সেনাবাহিনী ও আসাম রাইফেলকে মোতায়েন করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877